কবিতা – হাশিম কিয়াম

ঘর
সুখ-ডগমগ ঘরে বেঘোরে ছুঁয়ে গেলে
ভাঙনের আগুন-ডগি
বেগোছ বাতাসে উড়ে যায় বিশ্বাসের ছাই
ধ্যাবড়ানো অনুভূতি ধুয়ে যায় পাথর-নদীর
চোরাস্রোতে…
সময়ের বরফে জমাট বাঁধে জীবনের
রং-রস-গন্ধ…
তখন সাধক মন শিকল পরালে
অহমের লাল পায়ে, অথবা, থাকলে
প্রেমের উর্বরতায় ফোটা ফুলের গন্ধ ছড়ানো
উৎসবের পিছুটান, হয়তো, আঙিনায়
কিছু ঘাসফুল হেসে ওঠে, তবু, মরা
ঘাসের গান উঁকি মারে
দূরের বাউরি বাতাসের ঢেউয়ে…
ছায়ার কাফনে মোড়ানো জীবন
ঘষামাজা সম্পর্কের
জং-ওড়া উঠোন থেকে
দূরত্ব দৌড়ে আরো দূরে চলে যায়
কবের উথলিয়ে পড়া আবেগের হিমবাহ
কাদাটে জীবনের ওমের ফুলকির ঝাঁকে
ছায়া ফেলে…
স্বপ্ন বন্ধক রেখে বাঁচতে গিয়ে
মানুষ অজান্তে খুনি হয়ে ওঠে
মৃত্যুর আগে নিজেকে খুন করে
মুড়িয়ে রাখে ছায়ার কফনে…
মনের গহিনে মনের ছায়া
মনের গহিনে মন ধরে ঝুলে থাকে
অতৃপ্ত মনের ছায়া; রোদ্দুরের রংচটা
শরীর বেয়ে পড়ে সূর্যের গলিত চোখের ফোঁটা
চাঁদের কলঙ্ক মুছতে গিয়ে মৃত নক্ষত্রের
আলো ডুবে যায় অন্ধকারে; দলক-দিনের
সোঁদা গন্ধ পরে নেয় রাতের কাফন…
আইবুড়ো শরৎ-কন্যা হেমন্ত-নীহারে
পা পিছলে পড়ে যায়; শীত-বুড়ি আঁচলে
বেঁধে রাখে বসন্তের রং-তুলি-গান; দীর্ঘশ্বাস ফণা
তুলে খাবল মারে চাঁদের নাভিপদ্মে
কামনার প্রবল বর্ষণে ধুয়ে যায় চাঁদ-শিশুর
চিৎকার; শ্রান্ত চোখে, চোখে খুঁজি, স্বর্গীয়
আলোর কারুকাজ

হাশিম কিয়াম জন্ম ২০ এপ্রিল ১৯৭৭ সালে, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি গ্রামে। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত আছেন। স্কুলজীবন থেকে লেখালেখি শুরু করলেও ২০২০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘মহানরক’ এবং ২০২১ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘স্মৃতির জলে ভাপ ওঠে’। হাশিম কিয়াম এর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘নীল ডায়েরির নোনতা পাতা’ ২০২১ সালের আগস্ট মাসে এবং চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ ‘সম্পর্কের শিকড়ে বেদনার কষ’ ২০২২ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয়।
©All Rights reserved by Torkito Tarjoni