দীপ শেখর চক্রবর্তীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা বারাসাতে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্যে স্নাতোকোত্তর পাশ করার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা সম্পূর্ণ করেছেন। লেখালিখির সূত্রপাত স্কুল জীবনে।
লেখালিখি ছাড়াও ছবি আঁকা এবং ছবি দেখা তার প্রিয় শখ। দেশ বিদেশের সিনেমার প্রতি তার অসীম আগ্রহ রয়েছে।
মার্কেজ, কাফকা, টনি মরিসন, ফকনার, জেমস জয়েস, বিভূতিভূষণতার প্রিয় লেখকদের অন্যতম।প্রিয় রঙ তার - গাঢ় নীল।
তবুও ভিক্ষুক নই
নি:স্ব
তবুও ভিক্ষুক নই
হাত পেতে চাইব না
একটুও কাছে থাকা।
সন্ধের পথে পথে
কার কাছে যাওয়া! নীলাভ হাওয়ার ভেতর
একটিই পূর্ণচাঁদ পিছু নেয় -
চাইব না আর কিছু
কতটুকু লাগে,
ধনুক হাত থেকে ফেলে দিলে
একটিই মায়ার হরিণ
কার কাছে যাও!
গলার কাছেতে দুটি ছেদ রেখে গেছে
কালসাপ
প্রেম ওঠে, অভিমান ওঠে
কথা বুজে আসে ওগো
তবুও ভিক্ষুক নই
হাত পেতে চাইব না
একটুও কাছাকাছি থাকা।
শূন্য ঘর
আমি চাই
এই শূন্য ঘরে
তুমি এসো
এই মেঝেতে
তোমার পায়ের জলছাপ পড়ুক
এই পর্দার ভেতর
জমা হয়ে থাকুক
তোমার না বলা কথাগুচ্ছ
আমি চাই
এই ঘুলঘুলিতে
পায়রার মতো বাসা বাঁধুক
সমস্ত অধিকার
আমি চাই
তোমার ঘুমন্ত মুখ দেখি
আর
সূর্যের আলো
কীভাবে সে মুখ নিয়ে খেলে
সে কথাটুকু
লিখে রাখি
অধিকার লিখে রাখা যায়
জলছাপ লিখে রাখা যায়
এমনকি লিখে রাখা যায়
তোমার না বলা কথার কিছু কিছু
আমি চাই
এই শূন্য ঘরে
তুমি এসো
যেভাবে শিশুরা বিকেলের মাঠে এসে খেলে
এ খেলার নীরব দর্শক আমি
অপেক্ষায় থাকি
কখন তাদের রঙিন বলটি আমার দিকে ছুটে আসে
অপেক্ষায়
আমার অসাড় দু'টি হাত ঝনঝন করে ওঠে
আমি চাই
এই শূন্য ঘরে
তুমি এসো
তোমার ভিজে কাপড়
ছাদে মেলা থাকুক রোদে
দুপুর তিনটে অবধি ভিজে থাকুক
আমাদের সামান্য কলতলা
বিছানার চাদরের টানটান
গভীর রাতে কার একা চেপে রাখা কান্না
কান পেতে শুনি
আমি চাই
এই শূন্য ঘরে
তুমি এসো
তোমার সেই আসার ভেতরে
ঘুমন্ত পথ জেগে উঠে দেখে
কারা যেন তার মাথার কাছে এসে
বিশুদ্ধ বাংলা ভাষায় লেখা
এক পুরোনো বসতি রেখে দিয়ে গেছে
আমি চাই
একটি শূন্য ঘর
আর তোমার ফিরে ফিরে আসা।