তিনটি কবিতা – সমর্পিতা ঘটক


সমর্পিতা ঘটক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করেন। কবিতা ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ের প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ছোট বড় পত্রিকায়। প্রিয় বিষয়- সাহিত্য ,চলচ্চিত্র এবং ভ্রমণ
চিচিং ফাঁক
বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয় না এসব গুজবে
এসব অচঞ্চল ছিদ্র অন্বেষণ
জড়ো করে আনা বিমূর্ত কল্পকাহিনি
লেজা মুড়ো তফাতে অনির্দিষ্টতায়
জোড়া লাগেনা, বঁড়শিতে বেঁধেনা
পড়ে থাকে প্রত্ন আখরের মতো,
ভাত ডাল নুন ভালো ছিল বেশ
সহজ বৃত্ত আঁকা হয়ে যেত অনায়াসে
এখন রোজ কুনকোর তলায় মোহর আটকে যায়
আর চল্লিশ চোর দরজায় আড়ি পাতে
আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স আর আলিবাবা
হুড় হুড় দাবাং দাবাং দাবাং
দরজা হাট, ছিটকিনি-তালা বেবাক হাওয়া
চিচিং ফাঁক বলে দেখোই না একবার
এসো হে এসো হে এসো হে
আজি দখিন দুয়ার খোলা…
ধুলোমাখা আলো
কিরকম শান্ত সবকিছু আজ
মাথা শান্ত হয়ে গেলে পড়ে থাকে নিভু আলো
ধুলোমাখা ল্যাম্পপোস্টের মতো…
একটুখানি আলোয় দৃশ্যমান হয় না ভিতর ও বাহির,
ঝিলমিল অতীত, সফল অপেরা সঙ্গীত
ঝমঝম করে ফিরে গেছে স্টেশন ছাড়িয়ে
যতবার বাড়িয়েছ পা ততবার শিরদাঁড়া নিয়ে নানা ঝকমারি
সেসব গল্পও নেহাৎ নতুন নয়
নতুন লেখায় শব্দ সংখ্যা সীমিত
বিচ্ছিন্ন দ্বীপ আর রবিনসন ক্রুসো
ভেবেছ কখনো এমন জীবন ঘরে বসে কাটানো যায়!
এতগুলো বন্দিনী সকাল!
হাতের তালুতে রেখে উড়িয়ে দিও কোনোদিন
ঝরে পড়া চোখের পাতা ফুঁ দিয়ে
উড়িয়ে ভালো দিনের প্রার্থনা করত মেয়েরা
তখন জাহাজ আসত বন্দরে, প্রেমিকেরা নিয়ে আসত বসন্তবকুল
নীল জলে রঙিন মাছেরা বেসামাল দিনের মতো ব্যস্ত ভীষণ
সেসব দিন লিখে রেখেছি বালিতে, এঁকেছি ঘর সোনালি বালুতটে
পড়ে নিও, নিভু আলোতে পড়া যায় যতটুকু…
বই ও বাস্তু
প্রোমোটার আর প্রকাশক
যায় আর আসে পেন্ডুলামের মতো
একজন বাস্তু মাপে
অন্যজন তল
কবিতারা সিকি, আধুলি নাকি অচল!
দাঁড়ে বসে টিয়া রোদ খায়
বিকেলবেলায় বিষণ্ণ কাঁথায় আগুন জ্বেলে
তামাটে আধুলি শেষ কবিতার মতো ভেসে যায়
দূরে… প্রকাশকের হাতের বাইরে,
লার্জার দ্যান লাইফ…
প্রোমোটার ফিরে যায়, দু তিনটে কবিতা
শুনতেই সে গলদঘর্ম
ইট বালির জায়গাটা দুবার পড়তে হয়
হনুমান চল্লিশা বেজে ওঠে… ছন্দ পতন।
নতুন কবিতা, মনসা মঙ্গলের নতুন আঙ্গিক
সওদাগরের বুকের পাটা কতখানি দেখেই নিক
চৌকাঠে জেগে ওঠে মহাসর্প
বেশ কিছুদিন এখন নিশ্চিন্ত।
© All rights reserved by Torkito Tarjoni